আব্দুর রহমান ঈশান: জনবহুল রাজধানী ঢাকা এখন অনেকটাই ফাঁকা। নেই চিরচেনা যানজট, কোলাহল কিংবা হকারদের হাঁকডাক। পবিত্র ঈদুল ফিতরের লম্বা ছুটিতে রাজধানী ছেড়েছেন অসংখ্য মানুষ, আর তাই বদলে গেছে এই মেগা শহরের চিরচেনা রূপ। তবে ঈদের দ্বিতীয় দিন থেকে ধীরে ধীরে বাড়ছে যান চলাচল, যদিও গণপরিবহনে যাত্রী সংকট এখনো বিদ্যমান।
রাজধানীর খিলগাঁও, রামপুরা,মতিঝিল, পল্টন, শান্তিনগর, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, বাংলামটর, শাহবাগ ও মৎস্য ভবন এলাকায় সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, ঈদের দিনের তুলনায় মঙ্গলবার যানবাহনের সংখ্যা কিছুটা বেড়েছে। তবে বেশিরভাগ বাস ও গণপরিবহনে যাত্রী সংখ্যা ছিল কম, ফলে অনেক বাস যাত্রী খুঁজতে দীর্ঘক্ষণ স্ট্যান্ডে অপেক্ষা করতে বাধ্য হয়েছে।
খিলগাঁও জোড়পুকুর এলাকায় কথা হয় লেগুনা চালক আবুল কালাম এর সঙ্গে। তিনি জানান, ‘একটা গাড়ি পূর্ণ করতে এক ঘণ্টারও বেশি সময় লাগছে, যেখানে স্বাভাবিক সময়ে ১০-২০ মিনিটেই ভরে যেত। যাত্রী কম থাকায় বেশ লোকসান হচ্ছে। বকশিশ হিসেবে যাত্রীদের কাছ থেকে ৫ টাকা বেশি নিলেও তাতে ক্ষতি পোষানো যাচ্ছে না।’
শান্তিনগরে দেখা মেলে দোকান কর্মচারী মোস্তাফিজুর রহমানের সঙ্গে, যিনি এবার ঈদ ঢাকাতেই করেছেন। তিনি আজ যাচ্ছেন গাজীপুরে বোনের বাড়ি। আজমেরী গ্লোরি পরিবহনের একটি বাসে উঠেছেন তিনি। মোস্তাফিজুর বলেন, ‘পুরান ঢাকার ভিক্টোরিয়া পার্ক থেকে বাসে উঠে মাত্র কয়েক মিনিটেই শান্তিনগর চলে এসেছি! যেখানে অন্য সময় ঘণ্টার পর ঘণ্টা লেগে যেত, সেখানে আজ রাস্তা একেবারে ফাঁকা।’
গাবতলী থেকে প্রতিদিন রাজধানীতে আসেন রিফাত। তিনি জানান, ‘রাস্তায় কোথাও যানজট ছিল না, তবে প্রতিটি স্ট্যান্ডে বাস যাত্রী খুঁজতে দাঁড়িয়েছে। আমাদের কাছ থেকে ৫ টাকা করে বেশি ভাড়া নিয়েছে, তবে এই যাত্রী সংকটের জন্য সেটা মেনে নিয়েছি।’
বাস হেলপার আশিক জানান, ‘ফাঁকা গাড়ি নিয়ে রাস্তায় ঘুরতে হচ্ছে। যাত্রী সংকট তীব্র। তাই ঈদ বকশিশ হিসেবে সামান্য কিছু টাকা বেশি নিচ্ছি, তবে কেউ বাধ্য নন বেশি দিতে।’
রাজধানীতে কিছু যানবাহন চলাচল করলেও সড়কে যানজট নেই বললেই চলে। ফাঁকা রাস্তায় দাপিয়ে চলছে রিকশা, ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা, সিএনজি, প্রাইভেটকার ও মোটরসাইকেল। ব্যস্ততম শহরের এমন এক শান্ত পরিবেশ অনেকের কাছেই যেন অবিশ্বাস্য এক অভিজ্ঞতা।